একসময় স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে যখন অলস বসে থাকতাম তখন বড় দাদা কিংবা দিদির সংগ্রহে রাখা গল্পের বই নিয়ে পড়তে বসতাম। যাদের বাড়ির কাছে পাঠাগার ছিল তারা তো একধাপ এগিয়ে থাকত সবসময়।

ছোটবেলায় কিশোর গোয়েন্দা, সাইন্স ফিকশন, এডভেঞ্চার পড়েননি খুব কমই হয়তো আছেন। অনেকে আবার পাঠ্যবইয়ের ফাঁকে সুকৌশলে গল্পের বই লুকিয়ে পড়তাম।

সেই সব দিন অতীত। আজকে এই প্রজন্মের তরুণদের নিয়ে অনেকেই বলেন মাথা নিচু করে রাখা প্রজন্ম। বিজ্ঞানের কল্যাণে সারাক্ষণই স্মার্ট ফোনে গেইম কিংবা ভার্চুয়াল জগতের সময় কাটে তাদের। তারা জানে না নতুন বইয়ের গন্ধ বুঝেই না শব্দের খেলা।

যার ফলে আজ আমাদের সমাজের নানা অসংগতি বাড়ছে, অর্থহীন কিশোর গ্যাং এবং আগামীর বিশৃঙ্খলা।

No photo description available.

তবে তাদের থেকে অনেক অনেক এগিয়ে আছে কিছু তারুণ্যের শক্তি, আছে নবযৌবনের প্রতীক। বলা যায় মুক্ত পাখিদের মুক্ত ভাবে পথচলার স্থানই হলো মুক্তাঞ্চল। তবে এই পথ চলায় থাকে সত্য সাহস, থাকে সুন্দর সমাজের গান।

কিছু শালিক পাখি, দোয়েল পাখি ২০২০ সালের ৬ জুলাই গৃহবন্দী দিনগুলোতে তাদের অদম্য চেষ্টা আর ভালবাসা দিয়ে সাহিত্যের যে বটবৃক্ষ রোপণ করেছে তারই ছায়া আজ মুক্তাঞ্চল সাহিত্য চর্চা কেন্দ্র হবিগঞ্জ।

May be an image of text

আজ মুক্তাঞ্চল সাহিত্য চর্চা কেন্দ্র হবিগঞ্জের প্রথম বর্ষপূর্তি।

শুরুতেই শরৎ স্মারক, রৌদ্রকণ্ঠে মুক্তিবার্তা অনলাইন আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, বুক রিভিউ, বুক ফটোগ্রাফি, নব প্রবা সাহিত্য সাময়িকী সহ দৃষ্টিনন্দন সব কাজ।

তবে জনসাধারণের প্রসংশা প্রাপ্ত নান্দনিক কাজ হলো হবিগঞ্জ শহরের কালীগাছ তাল রোডে মুক্তাঞ্চলের গ্রাফিতি। স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা নিজ উদ্যমে শহরের চিত্র পাল্টে সুন্দরের বার্তা দিতে চেয়েছে।

No photo description available.

তারা চায় স্বপ্নীল শহরের দেয়ালে দেয়ালে বই নিয়ে স্লোগান হোক, বিশাল সংখ্যক বই নিয়ে পাঠাগার হোক, পাঠকের সংখ্যা বাড়ুক, বই নিয়ে বাঁচুক সবাই, বই হোক আমাদের আত্মার আত্মীয়, সাহিত্যের আলোয় আলোকিত জীবন নিয়ে সুন্দর সমাজের গান রচিত হোক সবার মনে।

জয় দেবনাথ, প্রতিবেদক, বাংলাদেশ দর্পণ