নেত্রকোনা: নেত্রকোণার খালিয়াজুরীতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন ও ধানের দাম বেশী পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় বোরো ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানা গেছে। নতুন ফসল উঠায় উপজেলার অধিকাংশ কৃষকের ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে খুশির আবহ ও সেইসাথে মুখের হাসি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ২০ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে ব্রি-২৮, ব্রি-২৯ ধান ও কিছু উন্নতমানের হাইব্রিড ধান চাষ করা হয়েছে। উপজেলা প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় ৭ হাজার ৩শ’ জন কৃষককে হাইব্রিড ধান দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার মেশিন) দিয়ে ফসল কর্তন করায় কৃষকের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। ২২ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৮০ ভাগ ফসল কাটা হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও কৃষককে উঠোন বৈঠক, গ্রুপ মিটিং-এর মাধ্যমে নানা ধরণের প্রশিক্ষণ ও কর্মসূচী প্রদান করা হয়েছে।


খালিয়াজুরী সদরের কৃষক নিরদ দাস, শিবু দাস, মনির হোসেনসহ আরো অনেকে জানান, ‘ধানের ভালো ফলন ও  ভালো দাম পাওয়ায় আমরা খুশি। সরকারী ধান সংগ্রহের সময় প্রকৃত কৃষকরা যাতে সরকারী গুদামে ধান দিতে পারে সেই দিকে কৃষি কর্মকর্তার কাছে অনুরোধ রইল। প্রকৃত কৃষকরা যাতে তালিকাভুক্ত হয় সে ব্যাপারে সরকারের নিকট আহ্বান রইল। গরম হাওয়াজনিত কারণে ক্ষতির সম্ভবনা দেখা গেলেও কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদানে সেই ক্ষতির পরিমান নাই বললেই চলে। এমনকি ধানে চিটাও নাই।’

এদিকে উপজেলার বল্লভপুর, আদমপুর, নয়াগাও, রোয়াইল, কাদিরপুর, আদাউড়া, আমানীপুর, কৃষ্ণপুর, নাজিরপুর, সদর,চাকুয়া,পাঁচহাট গ্রামের কৃষকেরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘খালিয়াজুরীতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৯৫০ হেক্টর এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৫ হাজার ৭৮ মেঃ টন। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার বেশি অর্জন করতে সমর্থ হয়েছি। তাছাড়া হিট শকের কারণে যে সমস্যার আশংকা করেছিল কৃষক তা আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় বিশেষ করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে আমরা কৃষককে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। তারই ফলশ্রুতিতে খালিয়াজুরীতে কৃষকের বাম্পার ফলন হযেছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘খালিয়াজুরী একটি হাওর অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় ফসল হানি যাতে না ঘটে আমরা ভাড়ায় আরো ত্রিশটি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে কৃষকদের উৎপাদিত ধান প্রায় ৮০ ভাগ কর্তন করে দিতে সমর্থ হয়েছি।  কম্বাইন্ড হারভেস্টর দ্বারা কর্তনের ফলে কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল বেশী দামে বিক্রি করে সন্তোষ প্রকাশ করছেন। আমরা আশাবাদী আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকেরা তাদের কাঙ্খিত সোনার ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হবে। ’

 


নয়ন বর্মন | নেত্রকোনা প্রতিনিধি