সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সনাতন ধর্মকে অসম্মান করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে কিছুদিন ধরেই ঢাবি শিক্ষার্থীদের একাংশের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছিল। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কতিপয় শিক্ষার্থীর ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো-ভিসি (প্রশাসন), প্রো-ভিসি  (শিক্ষা), প্রক্টর, ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের ডিন এবং ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস (আইবি) বিভাগের চেয়ারম্যান  বরাবর প্রতিবাদলিপি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ২টায় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান-এর কাছে এই প্রতিবাদলিপি হস্তান্তর করা হয়।

প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাবি শিক্ষার্থী ফারুক হোসেন গত ১৭ নভেম্বর ২০২০ রাত ১০টা ৩০ মিনিটে তার ফেইসবুক আইডি (Faruk Hossain Khokon) থেকে সনাতন ধর্মের অবতার শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী ও উস্কানিমূলক পোস্ট করেন। ফারুক আহমেদ ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

এছাড়া কিছুদিন পূর্বে ‘স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামক একটি ফেইসবুক গ্রুপে শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ আরেফিন তার (Md Arefin) নামক ফেইসবুক আইডি থেকে হিন্দুদের 'কুত্তার বাচ্চা' গালি ও তাদের দেবতা শিবকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।

এই দুজনের মন্তব্য সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের ধর্মানুভূতিতে ও মানুষের সুস্থ রুচিতে গভীরভাবে আঘাত করে ও তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বাংলাদেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠে এরকম তৎপরতায় মর্মপীড়াদায়ক। পরবর্তীতে দুজনই পোস্ট কমেন্ট নিজ নিজ ফেসবুক থেকে মুছে ফেলেন।

প্রতিবাদলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার জন্মলগ্ন থেকেই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। যে মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার শতবর্ষে পদার্পণ করছে, সে মুহূর্তেই সাম্প্রদায়িক ও মানসিক বিকারগ্রস্ত কিছু মহল এর ১০০ বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। এখনই এদের মূলোৎপাটন না করলে ও যথাযথ শাস্তি প্রদান না করলে অচিরেই এরা আগাছা হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য, সম্মানকে বিলীন করে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি করবে।

প্রতিবাদলিপিতে উক্ত দোষীদের শাস্তি দাবি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাম্প্রদায়িক চেতনা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আবেদন করা হয়।