কৈলাস মন্দির স্থাপত্য এবং সৌন্দর্য্যের জন্য সারা বিশ্বখ্যাত। কৈলাস মন্দির মহারাষ্টের ঔরঙ্গাবাদ জেলায় প্রসিদ্ধ ইলোরা গুহার মধ্যে অবস্থিত। ইলোরা গুহাটিকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীণ গুহা বলে মনে করা হয়। সৌন্দর্য ও রহস্যে ঘেরা এই মন্দিরটির সভ্যতা দেখলে বুঝা যায় যে তখনকার মানুষেরা সভ্যতায় কতটা উন্নত ছিল।
ইলোরায় রয়েছে ৩৪ টি গুহা। কৈলাস মন্দির তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ আলাদা উপায়ে। এই মন্দির তৈরি হয়েছে পাথরের পাঁহাড় কেটে। পাঁহাড় উপর থেকে নিচ দিকে কেটে তৈরি হয়েছে কৈলাস মন্দির। এছাড়াও এর গুহা গুলো বাইরের দিক থেকে ভিতরের দিকে কাঁটা হয়েছে। যাকে কাট ইন মোনোলিথ পদ্ধতি বলা হয় যা খুবই কঠিন এবং জটিল।
আজ পর্যন্ত কেউ আবিষ্কার করতে পারে নি এই মন্দিরটি ঠিক কত বছরের পুরোনো। তবে অনুমান করা হয় মন্দিরটি তৈরি করতে কয়েক হাজার বছর লেগেছিল। শুধু পাহাড় কেটেই তৈার হয়েছে এই মন্দির। নেই কোনো ইট, বালি এবং সিমেন্ট।
আর্কিওলজিক্যাল এবং জিওলজিস্টরা পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, এই মন্দির কোনো সাধারণ মন্দির নয় কারণ, এই মন্দিরের দরজার পিছনের সুরঙ্গ দিয়ে পৌছে যাওয়া যায় এক ভূগর্ভস্থ শহরে। এছাড়ার মন্দিরের নিচে রয়েছে ভূমিগত গুহা। আর্কিওলজিস্টদের মতে, প্রায় ৪ লাখ টন পাথর কেটে সরিয়ে তৈরি হয়েছে এই একমাত্র মন্দির। ইতিহাস বলছে এই মন্দিরটি বানাতে কেবল ১৮ বছর সময় লেগেছিল যা সত্যি অসম্ভব।
ধরে নেয়া যাক এই মন্দির বানানোর জন্য শ্রমিকরা প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা কাজ করেছে তাহলে ১৮ বছরে মধ্যে চার লাখ টন পাথর কেটে সরানো সহজ ব্যাপার নয়। তাদের প্রতি বছর প্রায় ২২ হাজার ২২২ টন পাথর কেটে সরাতে হয়েছে যার মানে হচ্ছে ৬০ টন পাথরকে রোজ এবং ৫ টন পাথরকে প্রতি ঘন্টায় এখান থেকে কেটে সরানো হয়েছে, এতো হল শুধুমাত্র পাথরগুলি কেটে সরানোর অনুমান এরপর রয়েছে এই মন্দিরে কলাকৃতি এবং ভাস্কর্য । মন্দিরের ভেতরের ভবনগুলি বানাতে কতটা সময় লেগেছে এই রহস্য, কৈলাস মন্দিরকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে।
এই মন্দিরের কাজ এতটাই নিঁখুত যা দেখলে মনে হয় এটা কোনো মানুষের কাজ না। বৃষ্টির জল সংরক্ষণের জন্য ভূমি নালাও রয়েছে সেখানে। ১৬৮২ সালে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব হাজার সৈন্য দিয়ে ৩ বছর চেষ্টা করেও ভাঙতে পারে নি এই মন্দিরটি। সত্যি এখানে একটা প্রশ্ন থেকে যায় যে, যে মন্দির মানুষ ভাঙতে পারে না এটা কি তাহলে আধো কোনো মানুষের দ্বারা নির্মিত?