বাউফল (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর বাউফল  উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড বাজেমহল এলাকায় অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ ভবন দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহারের অনুপোযোগী হয় উঠেছে। এ অবস্থায়  ইউপি কার্যক্রম চালাতে গিয়ে সেবা গ্রহীতারা চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।

জানা যায়, ২০০৬ সালে  উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের বাজেমহল গ্রামে বাজেমহল ফাজিল মাদ্রাসাসংলগ্ন এলকায়  কেশবপুর ইউনিয়নের ইউপি ভবন নির্মিত হয়। নির্মাণের পর থেকে এখন পর্যন্ত  ১৮  বছর যাবৎ ইউনিয়নের সব কার্যক্রম পরিচালনা হয়েছে এখান থেকে। ইউনিয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইউপি ভবন হওয়ায় ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের নাগরিক সেবা নিতে তেমন কোনো ঝামেলা পোহাতে হতো না। এখান থেকেই চাল, গম, আটা ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ থেকে শুরু করে জন্ম সনদ, মৃত্যু সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, চরিত্র সনদপত্র ইত্যাদি গ্রহণ করতেন ইউনিয়নবাসী।

ইউপি ভবনটি দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়ায় বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। কয়েক বছর যাবত একই অবস্থায় থাকলেও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কেউ এগিয়ে আসছেন না; ফলে চরম দুর্ভোগে ইউনিয়নের সেবাগ্রহীতারা।

সরেজমিন দেখা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের নাম ফলক পর্যন্ত নেই, দূর থেকে অপরিচিত কারো বোঝার উপায় নেই যে এটি একটি ইউনিয়ন পরিষদের মূল ভবন। ২০০৬ সালে নির্মিত ভবনের বেশির ভাগ দেয়াল ও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ছাদের অনেক অংশে বড়-বড় ফাটল ধরেছে।এছাড়াও গুদামঘর, গ্রাম-সালিশ কক্ষ দুটিরও বেহাল অবস্থা। ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। বেশকিছু জায়গায় বেরিয়ে পড়েছে রড। ভবনের আশপাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ জমে উঠেছে। শৌচাগার ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। ইউনিয়ন পরিষদে জনসাধারণের জন্য ২টি শৌচাগার রয়েছে, ২ টি শৌচাগারেরই বেহাল দশা, দরজা ভাঙ্গা, পানির লাইন ঠিক নেই, ইউপি ভবনের বিদ্যুৎতের সংযোগের বেহাল দশা, ভবনে উঠার সিড়িতে হাতল নেই, ২০১৬ সালে তৎকালীন চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলু শেষ সময়ে ইউপি ভবনের সামনে শহীদ মিনার ও ভবনের সীমানা নির্ধারনের জন্য ইট দিয়ে দেয়াল করার উদ্যোগ নেয়,শহিদ মিনার নির্মান হলেও দেয়ালের জন্য কয়েকটি কলাম করা হয়, সে কলাম গুলোও এখন ধ্বসে পড়েছে, তার  (লাভলু) মেয়াদের শেষে আর কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি বলে জানা যায়।

জানতে চাইলে স্থানীয়  সাকিব হোসেন নামের এক যুবক জানান, বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের চরম বেহাল দশা।  কয়কদিন পর পর ইউনিয়ন পরিষদের মটার চুরি হয়, সারা দেশে দৃষ্টিনন্দন ইউনিয়ন পরিষদ ভবন তৈরি হলেও এখানে তার ব্যতিক্রম। এ যেন দেখার কেউ নেই? তিনি আরও জানান, প্রতিটি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যদিও বলে থাকেন ইউনিয়ন পরিষদের সংস্কারের কথা এবং নিয়মিত এখানে বসে পরিষদ পরিচালনার কথা, কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর তা আর কেউ মনে রাখছেন না।

এ বিষয়ে কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান এনামুল হক অপু বলেন,  আমি গত ৯ই মার্চ  উপনির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছি এখনও শপথ অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে আমি ইউপি ভবনের বেহাল দশার কথা শুনেছি যে ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পরে, সাধারণত মানুষের বসার অনুপোযোগী এবং ভবনে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করাও ঝুকিপূর্ণ।  তাই আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই যে যত তারাতারি সম্ভব  ইউপি ভবনের সংস্কার কাজ করে সাধারণ মানুষের সেবা পেতে উপযোগী করে তুলে। 

উপজেলা প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দর্পণ