রংপুর:ধর্মীয় উস্কানীর জেরে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার হিন্দু পল্লীতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় এক ছাত্রলীগ নেতার সম্পৃক্ততার সমালোচনার মুখে রংপুর কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
  
রবিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি শফিউর রহমান স্বাধীন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ হোসেনের যৌথ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  তবে এতে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটির বিলুপ্তের কথা বলা হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার পীরগঞ্জের হিন্দু পল্লীতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মূলহোতা হিসেবে সৈকত মল্ডল ও রবিউল ইসলাম নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। সেদিনই ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সৈকত উস্কানি দিয়ে ও গুজব ছড়িয়ে হামলায় মদদ দেন। এরপরেই সৈকত ছাত্রলীগ নেতা এ বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে দেশব্যাপী তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। সৈকত রংপুরের কারমাইকেল কলেজ দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ওই বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তার বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামে। সে ওই গ্রামের রাশেদুল ম-লের ছেলে। আর রবিউল ইসলাম একই উপজেলার খেজমতপুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিন বাবুর ছেলে ও বটেরহাট জামে মসজিদের ইমাম।

সৈকত ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো বলে নিশ্চিত করেছেন, কারমাইকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুজ্জামান সিজার। তিনি সৈকত কলেজ ছাত্রলীগের দর্শন বিভাগের সহ-সভাপতি পদে ছিল। তবে গত ১৮ অক্টোবর দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ধর্মীয় উস্কানীর জেরে হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় একজন ছাত্রলীগ নেতা জড়িত থাকায় বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সাধারণ মানুষের মাঝে সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরে রংপুরের স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। পরে সমালোচনার মুখে রোববার বিকেলে কারমাইকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে রংপুর মহানগর ছাত্রলীগ। 

প্রসঙ্গত:  গত রবিবার (১৭ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে  ইসলাম নিয়ে অবমাননাকর একটি পোস্টের জেরে রংপুরের পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া-বটতলা ও বড় করিমপুর গ্রামে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৬টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এঘটনায় তিন মামলা দায়ের করে পুলিশ।


প্রতিবেদক, বাংলাদেশ দর্পণ