ভারতবর্ষের বিশ্বাসে ধর্মান্তর ছিল না। সকলেই ছিল যার যার ইষ্ট অনুসারে বিভিন্ন সম্প্রদায় ভূক্ত। যারা শিবের উপাসনা করতেন, তাদের বলা হত শৈব।একইভাবে কেউ বিষ্ণুর উপাসনা করে বৈষ্ণব নামে অথবা শক্তিকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করে শাক্ত নামে খ্যাত হতেন। ভারতবর্ষের ইতিহাসে দেখা যায়, একই পরিবারে কেউ শিবের উপাসক ছিলেন ; তেমনি আবার বুদ্ধ বা মহাবীরের উপাসক ছিলেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী হয়েও কেউ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের এবং জৈন সম্প্রদায়ের প্রবর্তক মহাবীর বা বিভিন্ন তীর্থঙ্করের উপাসনা করলে তাদের আলাদা ধর্ম বিশ্বাস হিসেবে চিহ্নিত করা হত না। বিষয়টি ষষ্ঠ-সপ্তম শতাব্দীর খ্যাতিমান গদ্যকবি বাণভট্টের 'হর্ষচরিত' গদ্যকাব্যের পঞ্চম উচ্ছ্বাসে দৃষ্টান্ত হিসেবে পাওয়া যায়।হর্ষবর্ধনের পিতা মহারাজ প্রভাকরবর্ধন যখন মৃত্যুশয্যায়, তখন তাঁর আরোগ্য কামনা করে যেমন কুলদেবতার পূজা করা হচ্ছিল, ভগবান শিবের পূজা করা হচ্ছিল ; তেমনি বৌদ্ধ বিদ্যামন্ত্র 'মহামায়ূরী' পাঠ করা হচ্ছিল।

বর্তমানে কেউ ধর্মান্তরিত হলে যে, তাঁর বিশ্বাস সহ আবহমান সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন করতে হয়, এ বিষয়টি প্রাচীন ভারতবর্ষে ছিল না। এ বিষয়টি এদেশে এসেছে প্রথম আরবীয়, তুর্কি এবং সর্বশেষ ইউরোপীয় ধর্মীয় বিশ্বাসকে উপলক্ষ করে। আরবীয় এবং ইউরোপীয়দের ধর্মীয় বিশ্বাসে নব্য এ ''ধর্মান্তর শব্দটি শুধু একটি শব্দই নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে অসংখ্য ঘটনার অভিঘাত। যাদের পরিবারে বিষয়টি ঘটে, তারা এই অভিঘাত হাড়েমজ্জায় টের পায়। সনাতন বিশ্বাসে যেহেতু ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টি নেই; আছে শুধু শুদ্ধিকরণ যজ্ঞ। অর্থাৎ কেউ যদি মনে করে সে অশুদ্ধ পাপপথে এতদিন চলেছে, তার যখন বিষয়টি জ্ঞানোদয় হবে তখনই সে শুদ্ধি যজ্ঞের মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ করে পাপের পথ অধর্মের পথ থেকে নিজেকে প্রত্যাহৃত করবে। বিপরীতে যারা ধর্মান্তরিত করে নিজেদের লোকবল বৃদ্ধি করতে চায় তাদের প্রধান লক্ষ্যই হল হিন্দু সম্প্রদায়। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের তাদের কাছে মৎস্য শিকারের নদী ; যে নদীতে তারা আসে ধর্মান্তর নামক মৎস্য শিকারে।

বর্তমান বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক সমস্যা হল স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় ফাঁদে পরে ধর্মান্তরিত হওয়া। এ ধর্মান্তরিত হওয়ার ফাঁদে হিন্দু সম্প্রদায় পরার অন্যতম কারণ, আজ প্রায় হাজার বছর ধরে তারা এর অভিঘাতে পরলেও; খুবই আশ্চর্যজনক হলেও বিষয়টি সত্য তারা বিষয়টি নিয়ে আজও স্বাচ্ছন্দ্যে খোলাখুলিভাবে কথা বলে না। কিন্তু এই বিষয়টি থেকে সত্যিকার ভাবেই হিন্দু সম্প্রদায় মানুষেরা উত্তরণ চায়, তবে তাদের বিষয়টির ভয়াবহতা নিয়ে খোলাখুলিভাবে সকলের কথা বলতে হবে। মারণব্যাধি 'এইডস' রোগটি নিয়ে মানুষ একটি সময়ে অনেক লজ্জা পেত; বিষয়টি নিয়ে কেউ কথা বলতে চাইত না। কিন্তু আজ সকলেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলে এবং রোগটির ভয়াবহতা সম্পর্কে জানে। এতে মানুষ দিনেদিনে যেমন সচেতন হয়েছে, ঠিক তেমনি এইডস রোগটিও আর মানুষকে অসচেতন ভাবে গ্রাস করতে পারে না। যারা এর শিকার হয়, তারা অনেকটা জেনে-বুঝেই আত্মঘাতী হয়ে হয়।

এ ধর্মান্তরিত হওয়ার ফাঁদে যে কত হিন্দু পরিবার; কত মা ছেলের সম্পর্ক ; কত ভাইবোনের সম্পর্ক ; কত ভালবাসার প্রিয়জন এবং কতশত আত্মীয় পরিজন জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এর সঠিক পরিসংখ্যান কেউ কোনদিন দিতে পারবে না। শুধু যার পরিবার পরিজন যায়, তারাই অনুভব করতে পারে এর বেদনা। আজ থেকে প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বে বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর জীবনেও এ ধর্মান্তরের নিষ্ঠুরতা দেখা যায়। প্রেমিক জয়ানন্দকে আমৃত্যু ভালবেসে গিয়েছেন, কিন্তু কোনদিনও আপন করে কাছে পাননি। কেউ ধর্মান্তরিত হলে তার পরিনতি যে করুণ হয় একথা জয়ানন্দ জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন। আজও ফুলেশ্বরী নদীর জল কলকল ধ্বনিতে এ ঘটনার ব্যথা বুকে বয়ে নিয়ে চলছে। বিষয়টি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভগবদগীতার তৃতীয় অধ্যায়ে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বলেছেন।

শ্রেয়ান্ স্বধর্মো বিগুণঃ পরধর্মাত্ স্বনুষ্ঠিতাৎ৷

স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ৷৷

(শ্রীমদ্ভগবদগীতা: ৩.৩৫)

"নিজ ধর্মের অনুষ্ঠান দোষযুক্ত হলেও উত্তমরূপে অনুষ্ঠিত আপাত দৃশ্যমান পরধর্ম থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই নিজধর্ম সাধনে যদি মৃত্যুও হয়, তবেও সে ধর্ম কল্যাণকর ; কিন্তু পক্ষান্তরে পরধর্ম ভয়াবহ। "

মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যে তিনজন খ্যাতিমান মহিলা কবিকে পাওয়া যায়। তাঁরা হলেন চণ্ডীদাসের সাধনসঙ্গিনী রামতারা বা রামী, শ্রীচৈতন্যদেবের পার্ষদ মাধবী এবং চন্দ্রাবতী। চন্দ্রাবতী হলেন বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি এবংমহিলা হিসেবে প্রথম রামায়ণের রচয়িতা। কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার পাতুয়ারী গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি ১৫৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৬০০ খ্রিস্টাব্দ সময়কাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।তাঁর পিতা ছিলেন মনসামঙ্গলের রচয়িতাদের মধ্যে অন্যতম কবি দ্বিজ বংশীদাসের কন্যা।চন্দ্রাবতীর মায়ের নাম সুলোচনা। দেশের প্রথম নারী কবি। চন্দ্রাবতীর জীবনকাহিনি নাটকের চেয়েও নাটকীয় এবং বেদনাভারাতুর।

কিশোরগঞ্জের ভাটি অঞ্চলের মানুষের লোকগাথায় এক করুণ রসে সিক্ত কিংবদন্তি চরিত্ররূপে চন্দ্রাবতীর প্রেমকথা আজও বহমান। কবি চন্দ্রাবতীর প্রেমের কথা মৈমনসিংহ গীতিকায় অর্ন্তভুক্ত ‘চন্দ্রাবতী’ পালাটির অত্যন্ত সুন্দর করে করে বর্ণিত হয়েছে। কবির মৃত্যুর পর পালাটি রচিত হয়। রচনা করেছিলেন কবি নয়নচাঁদ ঘোষ।৩৫৪ ছত্র ও ১২ অঙ্কে বিভক্ত নয়নচাঁদ ঘোষ প্রণীত 'চন্দ্রাবতী' পালায় কবি চন্দ্রাবতীর জীবনকাহিনী বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে।

‘চন্দ্রাবতী’ পালা থেকে জানা যায়, চন্দ্রাবতী ও জয়ানন্দ ছেলেবেলা থেকেই একত্রে খেলাধুলা করে বড় হয়ে ওঠেন। ধীরেধীরে তাঁরা একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে প্রেমের সূত্রে আবদ্ধ হন। তাঁদের দুইপরিবারের অভিভাবকদের সম্মতি ছিল বিয়েতে। কিন্তু বিধি বাম চন্দ্রাবতীর ললাটে। যেদিন তাঁদের বিয়ের দিন ধার্য করা হয়, সেদিনই ঘটে নাটকীয়তা। ষষ্ঠ-সপ্তম শতাব্দীর খ্যাতিমান গদ্যকবি বাণভট্ট তাঁর 'হর্ষচরিত' গদ্যকাব্যের পঞ্চম উচ্ছ্বাসে বলেছেন,"চঞ্চল বিদ্যুৎ যেমন প্রথমে উজ্জ্বল আলোক দিয়ে পরে প্রচণ্ড বজ্রপাত ঘটায়; চঞ্চল ভাগ্যও তেমনি প্রথমে মানুষকে সুখ দিয়ে পরে দারুণ দুঃখ দিয়ে থাকে।"

বিয়ে দিন ধার্য হয়ে যাওয়ার পরে ঠিক এমনই ঘটনা ঘটে চন্দ্রাবতীর জীবনে।সংবাদ আসে, আশমানী বা মতান্তরে কমলা নামে এক মুসলিম নারীর প্রতি আসক্ত জয়ানন্দ। জয়ানন্দ চন্দ্রাবতীর সাথে প্রতারণা করে একইসাথে দুজনের সাথেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ ঘটনা জানাজানি হতে চন্দ্রাবতীর মাথায় আকাশ ভেঙে পরে। আশমানির সাথে সম্পর্কের ভুল যখন জয়ানন্দ উপলব্ধি করতে পারে, তখনই সে আশমানিকে মানসিকভাবে ত্যাগ করে চন্দ্রাবতীর কাছে সম্পূর্ণ চলে আসতে চায়। কিন্তু মুসলমান কাজি সাহেব সুযোগ পেয়ে জয়ানন্দকে ধর্মান্তরিত করে আশমানীর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তৎকালীন রাজনৈতিক চাপে বিয়ের জন্য ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে হয় জয়ানন্দকে। ধর্মান্তরিত হয়ে তার নতুন নাম হয় জয়নাল। ঘটনার আকস্মিকতায় চন্দ্রাবতী মনে নিদারুণ আঘাত পান। বিপরীতে জয়ানন্দও জীবন্মৃত হয়ে যায়।

পিতা দ্বিজ বংশীদাস সম্মতি এবং চন্দ্রাবতীর ইচ্ছায় ভগবান শিবকেই পতিরূপে গ্রহণ করে শিবমূর্তির সাথে বিয়ে হয় চন্দ্রাবতীর। বাকি জীবন এভাবেই তিনি কঠোর তপস্যায় অতিবাহিত করে নিজেকে দেবীর পর্যায়ে উন্নীত করেন। পিতা দ্বিজ বংশীদাস তখন চন্দ্রাবতীকে শিবপূজা এবং সাধারণ মানুষের মুখের ভাষায় ‘রামায়ণ’ রচনার নির্দেশ দেন। পিতার নির্দেশ পালন করে, কবি চন্দ্রাবতী পরবর্তীকালে শিবপূজায় ব্রতী হয়ে জীবনের এক পর্যায়ে এসে রচনা করলেন এক অনন্যসাধারণ ‘রামায়ণ’।

কাজীর মৃত্যুতে সুযোগ বুঝে জয়ানন্দ আবার চলে আসে চন্দ্রাবতীর কাছে। প্রেমিকের অনুশোচনা এবং ক্ষমা একবিন্দুও টলাতে পারেনা চন্দ্রাবতীকে। হাজার অনুরোধ করেও একবারের জন্যেও দর্শন পান না চন্দ্রাবতীর। অনুশোচনায় দগ্ধ হতে থাকেন জয়ানন্দ। জীবনের প্রতি ঘৃণা ধরে যায় জয়ানন্দের। বেঁচে থাকার সম্পূর্ণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। স্থানীয় ফুলেশ্বরী নদী বা মতান্তরে সুনন্দা নদীতে আত্মহত্যা করেন জয়ানন্দ।অভিমানী চন্দ্রাবতী জয়ানন্দকে ফিরিয়ে দিলেও, মন থেকে ভালবাসাকে ফিরিয়ে দিতে পারেননি। জয়ানন্দের ফুলেশ্বরী নদীতে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে আত্মহত্যা বেদনাহত চন্দ্রাবতীকে আরো শোকগ্রস্ত করে তোলে।বেদনাভারাতুর শোক ভুলে থাকার প্রচেষ্টায় পিতার আদেশে রামায়ণকথা রচনায় প্রবৃত্ত হন। চন্দ্রাবতীর কষ্ট মূর্তিমতী হয়ে উঠে সীতা চরিত্রে। রামায়ণ পালাটি শেষ করে যেতে পারেননি চন্দ্রাবতী ; এর আগেই তাঁর মৃত্যু ঘটে।চন্দ্রাবতী অজস্র লোকগীতি রচনা করেন। নৌকার মাঝির কণ্ঠে, ব্রতে, বিয়েতে এবং প্রতিদিনের গার্হস্থ্য জীবনে আজও শোনা যায় চন্দ্রাবতীর লোকগীতিগুলো।

দীনেশচন্দ্র সেনের মতে কবি চন্দ্রাবতী ১৫৫০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। মৈমনসিংহ-গীতিকার ‘জয়-চন্দ্রাবতী’ উপাখ্যানের এক করুণ রসের নায়িকারূপে ভাটি অঞ্চল সহ সারা বাংলায় তিনি অমর হয়ে আছেন। চন্দ্রাবতীর লিখিত অসমাপ্ত রামায়ণটি ১৯৩২ সালে দীনেশচন্দ্র সেন প্রকাশ করেন।পূর্ববঙ্গ-গীতিকার চতুর্থ খন্ডের ২য় ভাগে এ রামায়ণ স্থান পেয়েছে। কবি চন্দ্রাবতীর সৃজনপ্রতিভার বাইরে ব্যক্তি চন্দ্রাবতীর জীবন এবং তাঁর প্রেমশোকগাথা লোকসমাজ-সাহিত্যে বেশি প্রচলিত এবং প্রতিষ্ঠিত। এর ফলে কিংবদন্তি চরিত্ররূপে কবি চন্দ্রাবতী ভাটি এলাকার লোকগাথায় এবং লোকমানসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। বঙ্গের সুবিদিত লোকসাহিত্যগবেষক দীনেশচন্দ্র সেন ও ক্ষিতিশ চন্দ্র মৌলিকের সম্পাদনায় প্রকাশিত যথাক্রমে মৈমনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকায় ‘চন্দ্রাবতী’ পালাটি রয়েছে। এমনকি চন্দ্রাবতী লিখিত ‘মলুয়া’, ‘দস্যু কেনারামের পালা’ ও ‘রামায়ণ’ পালাও এতে সংকলিত আছে।

এ ধর্মান্তরের কারণেই কবি চন্দ্রাবতী হারায় তাঁর প্রেমাস্পদ জয়ানন্দকে। বিনিময়ে সারাটি জীবন তাঁকে জয়চন্দ্রের বিচ্ছেদজ্বালা সহ্য করতে হয়েছে। হয়ত এ কারণে সাহিত্য সমৃদ্ধ হয়েছে, কিন্তু এর বলি হয়ে জীবন। ধর্মান্তরিত প্রসঙ্গে আজও আমরা একই স্থানে দাড়িয়ে আছি। ছলে বলে কৌশলে ধর্মান্তরিত হচ্ছে আমাদের ছেলেমেয়েরা। আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেই না। তাই সমুহ বিনাশে স্বচক্ষে দেখেও আমরা একই ভুল বারবার করি। এখনও করে চলছি। আমাদের সাধুসন্তরা যেভাবে আত্মঘাতী নির্বোধের মত সর্বধর্ম সমন্বয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে, তাতে সমস্যা আরও প্রকটিত হচ্ছে। এখনও কি সময় আসেনি ঝেড়ে কাশার। বিষয়টি নিয়ে আমরা যত বেশী গোপনীয়তা করারা চেষ্টা করছি,ততই সে আষ্টেপৃষ্টে আমাদের বেঁধে ফেলছে। বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতী থেকে আজ পর্যন্ত, একই ধারাবাহিক পুনরাবৃত্তি দেখছি আমরা আমাদের আশেপাশে। আমরা চাইনা আর কোন জয়ানন্দ সাময়িক ফাঁদে জয়নুল হয়ে পরিশেষে আত্মহত্যা করে জীবনকে শেষ করে দিক। আর কোন চন্দ্রাবতী ভালবাসার মানুষকে না পেয়ে, কুমারী অবস্থায় একটু একটু করে জীবনকে শেষ করে দিক। পাঁচশত বছর পূর্বে চন্দ্রাবতীর জীবনে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক নিষ্ঠুরতম ঘটনার চরিত্রগুলো আজও যেমন আমাদের আশেপাশে ; তেমনিভাবে সমাধানও আমাদের আশেপাশে এবং সর্বোপরি আমাদের মধ্যে। শুধু প্রয়োজন সচেতনতা।

লেখক: কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী