চার বছর আগের এক পরাজয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন খাদের কিনারে; সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে, আততায়ীর বুলেট এড়িয়ে, অধিকাংশ মার্কিন ভোটারের সমর্থন নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ডনাল্ড ট্রাম্প।
রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্পের জন্য এ এক অসাধারণ প্রত্যাবর্তনের গল্প। এ দফায় তিনি ৪ বছরের জন্য হোয়াইট হাউজ নিশ্চিত করেছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে ইলেকটোরাল কলেজের ৫৩৮টি ভোটের মধ্যে ২৭০টি পেলেই চলে। সর্বশেষ প্রাপ্ত ফলে ট্রাম্প জিতে নিয়েছেন ২৭৯টি ইলেকটোরাল ভোট। আর হ্যারিস পেয়েছেন ২২৩ ভোট।
ট্রাম্পের এই জয়ের মধ্য দিয়ে একবার হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় চেষ্টায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার দ্বিতীয় ঘটনা ঘটল যুক্তরাষ্ট্রে। তার আগে এই রেকর্ড ছিল কেবল গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের। ১৮৮৮ সালে নির্বাচনে হেরে গিয়ে চার বছর পর ফের তিনি জয়ী হয়েছিলেন ১৮৯২ সালে।
৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প নানা নিরিখেই দেশটিতে ইতিহাস গড়লেন। তবে নিউ ইয়র্কের এই ধনকুবেরকে ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিয়ে বিশ্বকে আরো একবা ব্যবসা থেকে রাজনীতিতে আসা ট্রাম্পের কেলেঙ্কারির শেষ নেই। দুনিয়াজুড়ে তাকে নিয়ে সমালোচনা আর শঙ্কারও কমতি নেই। তিনিই হতে যাচ্ছেন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট।
ক্যাপিটল ভবনে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল- তাতে ধরে নেওয়া হয়েছিল, ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটেছে। তার অনেক দাতা ও সমর্থক আর কখনও ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন না বলে জানিয়েছিলেন। ঘনিষ্ঠ মিত্ররাও তার দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন।
এবারের নির্বাচনে আলোচনার একটি বড় বিষয় ছিল গর্ভপাতের অধিকার। হ্যারিস সারাদেশের নারীদের জন্য প্রজনন অধিকার সুরক্ষা আইনের পক্ষে তিনি কথা বলেছিলেন। অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছিলেন, নারীদের যাতে গর্ভপাতের কথা ভাবতে না হয়- সেটি তিনি নিশ্চিত করবেন।
সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের সময়ে নিয়োগ দেওয়া তিন বিচারকের হাতেই যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল হয়েছিল। সে কারণে গর্ভপাত ইস্যুতে নারীদের মন জয় করতে হিমশিম খেতে হয়েছে ট্রাম্পকে। তবে সেটা তার ফের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে বাধা হতে পারেনি।
এবারের নির্বাচনি প্রচারের সময় বিভিন্ন জনমত জরিপে আমেরিকানদের প্রায় অর্ধেকই বলেছিলেন, ৪ বছর আগের তুলনায় এখন তারা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে খারাপ অবস্থায় আছেন। আর মঙ্গলবার ভোটের পর এডিসন রিসার্চের বুথফেরত জরিপে দেখা গেছে, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে যাদের উদ্বেগ বেশি ছিল, তারাই ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকেছেন।
বাংলাদেশ দর্পণ