নেত্রকোনা: জেলার ভারত সীমান্তবর্তী কলমাকান্দা উপজেলায় বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে নেত্রকোনার নাগড়া এলাকা থেকে আসা একদল তরুন। নিজেদের উদ্যোগ ছাড়াও এলাকাবাসী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে  শতাধিক পরিবারের মাঝে এই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল, শুকনো খাবার,পানি,মোম,দিয়াশলাই, ঔষধ, ও খাবার স্যালাইন।

মঙ্গলবার(২১ জুন) সকালে উপজেলার গুতুরা বাজার থেকে শুরু করে পাঁচগাঁও এলাকা পর্যন্ত বন্যার্তদের মাঝে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এসময় তরুনদের মধ্যে রিয়াদ,কাউসার,বাবু, অন্তর,সজন ,সূর্য,সজীব,হৃদয়,গোবিন্দ, রাতুল, সৌরভ, মাহিন, প্রান্ত, বৃত্ত, সাগর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জেলার বন্যাদুর্গতদের মাঝে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।জেলা প্রশাসন ছাড়াও,জেলা পুলিশ প্রশাসন, বিজিবি,রেডক্রিসেন্ট,ইসকনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এসব ত্রাণ সহায়তায় অংশ নিচ্ছে।


উল্লেখ্য, ভারি বৃষ্টিপাত ও মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্টি হওয়া বন্যায় নেত্রকোনার ১০টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে।গত দুদিনে তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলায় পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে, তবে অন্যান্য উপজেলায় বাড়তে শুরু করেছে পানি। স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যায় জেলায় কয়েক লাখ লোক পানি বন্দী অবস্থায় রয়েছে।


জেলায় চলমান বন্যায় নেত্রকোনার ১০ উপজেলায় মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও কৃষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী,জেলার অন্তত ২৫ হাজার বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক পুকুরের প্রায় ১১ হাজার টন মাছ বন্যার জলে ভেসে গিয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ২২৩টি গবাদিপশুর খামার এবং ৪৪২টি হাঁস-মুরগির খামার প্লাবিত হয়েছে।


এছাড়া পানিতে নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হয়েছে ১ হাজার ৯১ হেক্টর জমির ধান, পাট ও সবজি জাতীয় ফসল। গোখাদ্যের অভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে।


জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী,জেলায় ৩৪২টি আশ্রয় কেন্দ্রে দেড় লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যায় জেলায় এখন পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।



নেত্রকোনা প্রতিবেদক,বাংলাদেশ দর্পণ