দুই বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া আলমগীর কবিরকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানা সমালোচনা। সেই সমালোচনার কারণ ফেসবুকে তার বিতর্কিত পোস্টগুলো নিয়ে।

আলমগীর কবিরের যে ছবিটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে সেটি হলো তার ফেসবুক প্রোফাইলে বিয়ার ও সিগারেটের প্যাকেটের ছবি পোস্ট করা। এছাড়া দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা, খালি গায়ে অশালীন ভংগিতে ছবি শেয়ার করাও উল্লেখযোগ্য।

আলমগীর কবিরের ফেসবুকে প্রোফাইল ঘুরে দেখা গেছে, বিয়ার ও সিগারেট নিয়ে তিনি ২০২০ সালের ২ জুন একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ওই ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন ‘‘বিন্দাস হয়ে নাচে রে, বিন্দাস হয়ে বাঁচো রে, অল ডে নাইট’’। খালি গায়ে ছবি পোস্ট করেছেন সাম্প্রতিক সময়ে। ওই ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন ‘‘কারো করোনা টিকা দেওয়ার ডেট ভুলে গেলে আমার কাছে এসো’’।


জানা গেছে, আলমগীর কবিরের প্রকৃত নাম আলমগীর হোসেন। তার জন্ম জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার বরাইল গ্রামে। পল্লী চিকিৎসক মো. কফিল উদ্দিন ও আম্বিয়া বেগমের ৫ সন্তানের মধ্যে কবির কনিষ্ঠ। বড় সন্তান রুহুল আমিন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। কবিরের বড় ৩ বোন রুপালী, নূরজাহান ও সুরাইয়া। আলমগীর কবির বর্তমানে বগুড়া শহরের জহুরুল নগর একতলা মসজিদ এলাকায় একটি বাড়িতে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে থাকেন।

এদিকে বগুড়া আজিজুল হক কলেজের পাশে অবস্থিত জহুরুল নগর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন এমন একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়ার পোস্টার এলাকার অনেকেরই চোখে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনাও করেছেন। তবে ওই এলাকার মেসে থাকেন এমন কেউ এ ধরনের কথা শোনেননি। আলমগীর ভাইরাল হওয়ার জন্যই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি ওই এলাকার বাসিন্দাদের।

এমনকি আলমগীর কবিরের স্নাতকে দেশের মধ্যে প্রথম হওয়ার খবরটিও ভুয়া বলে দাবি করেছেন তারা সহপাঠীরা। তাদের মতে, আলমগীর অনার্সে ৩.৪৭ সিজিপিএ পেয়েছেন। তিনি নিজ কলেজের বিভাগের মধ্যে হয়েছেন ২২তম।

সরকারি আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা আলমগীর কবিরের এমন পোস্টার ও রেজাল্টের বিষয়ে জানান, চাকরি না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে আলমগীর। দীর্ঘদিন সে শিক্ষকদের কাছে থেকে দূরে ছিল বা কোনো যোগাযোগ ছিল না। তার ভেতরে এত হতাশা বেড়েছে, যে নিজেকে স্থির রাখতে পারছে না।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, ভাইরাল আলমগীর কবিরকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু সে সরকারি চাকরি ছাড়া করবে না। আসলে তার উদ্দেশ্য কী? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।