নেত্রকোনাঃ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের আসন্ন ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন আইনজীবী ও সাংবাদিক এডভোকেট প্রবীর মজুমদার চন্দন। দায়িত্ব পেলে সংগঠনকে আরো মজবুত ও সুদৃঢ় অবস্থানে নিয়ে যেতে চান তিনি।

স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন এই রাজনীতিবিদ বিভিন্ন সামাজিক,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় রয়েছেন দীর্ঘদিন যাবৎ।

এডভোকেট প্রবীর মজুমদারের জন্ম এক রাজনীতি সচেতন পরিবারে। তার পিতা স্বর্গীয় প্রমোদ চন্দ্র মজুমদার ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার দায়ে ১৯৩৯ সালে ১ বছর ৬মাস কাল  রাজবন্দী হিসেবে ময়মনসিংহ কারাগারে বন্দী ছিলেন।তার বড় ভাই স্বর্গীয় দিলীপ কুমার মজুমদার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে বাঘমারা ইউথ ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া আরেক বড়ভাই স্বর্গীয় প্রভারঞ্জন মজুমদার কাঞ্চন ৭৫ এ প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সংগঠিত ও সহায়তা করার অপরাধে দেড় বছর রাজবন্দী হিসেবে জেল খেঁটেছেন।কারাবন্দী থাকা অবস্থায় কঠিন নির্যাতনের শিকার হন তিনি।ফলশ্রুতিতে কারামুক্ত হওয়ার পর যতদিন বেঁচেছিলেন,ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন।


এই পরিবারটির সর্বকনিষ্ঠ ছেলে এডভোকেট প্রবীর মজুমদার।তার রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় দুর্গাপুরের আরেক অবিসংবাদিত নেতা জালালউদ্দিন তালুকদারের হাত ধরে,১৯৭২ সালে স্কুল জীবনে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হলে,১৬ই আগস্ট রাজপথে প্রতিবাদ করেন। এসময়কালে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সহায়তা কারী হিসেবে ভূমিকা রাখেন।১৯৭৭ সালে ময়মনসিংহে প্রথম ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য রাজপথে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন ও প্রতিরোধ যোদ্ধাদের আশ্রয় এবং সহায়তা করার অপরাধে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন। ১৯৮১ সালে ময়মনসিংহে আমোকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেলে বার্ষিকী ও সাহিত্য সম্পাদক পদে বাবু-টজু পরিষদে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮২ সনে ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের(একাংশ) কোষাধ্যক্ষ পদে মনোনীত হন। ১৯৮৩ সনে আনন্দমোহন কলেজের বাংলা বিভাগ ছাত্রলীগের(একাংশ) প্যানেলে জিএস নির্বাচিত হন ও ময়মনসিংহে প্রথম সামরিক আইন বিরোধী মিছিলে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অগ্রণী ভূমিকা পালনের ফলে পুলিশি নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার আসামী হতে হয়। ১৯৮৪ সনে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্য্য নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোনীত হন।১৯৯০ সনে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন তিনি।১৯৯২ সনে আওয়ামী যুবলীগে যোগদান করেন।২০১২ সালে ময়মনসিংহ আওয়ামীলীগে প্রাথমিক সদস্য হিসেবে যোগদান।২০১৯ সনে ময়মনসিংহ বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদে যোগদান করেন। এছাড়া দুর্গাপুরে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর পক্ষে জনমত গঠন ও বিপুল ভোটে জয় আনার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে তার। 


বর্তমানে সংগঠনের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ও দলীয় কর্মীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার প্রত্যয়ে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন।


১৯৮৬ সালে ময়মনসিংহ জেলা জজকোর্টে আইনজীবী হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৮৭ সাল হতে আইন পেশার পাশাপাশি 'কারিতাস বাংলাদেশ',এর

ময়মনসিংহ অঞ্চলে বিভিন্ন চুক্তিভিত্তিক আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানেও আইনি উপদেষ্টা ছিলেন। বর্তমানেও আইন পেশার সাথে যুক্ত থেকে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার আইন উপদেষ্টা হিসেবে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।তিনি বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার আইন সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কাজে নিরলসভাবে নিয়োজিত রয়েছেন তিনি।

দুর্গাপুরের বেআইনি সাদামাটি উত্তোলন বন্ধ ,ব্লক বাঁধ নির্মাণ, শিবগঞ্জ বেরিবাঁধ তৈরীসহ, শ্যামগঞ্জ হতে দুর্গাপুর পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক,শিক্ষক, ছাত্র,আইনজীবীসহ সকল স্তরের সাধারণ মানুষকে নিয়ে এডভোকেসি কার্যক্রমের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।


করোনাকালীন সময়ে দুর্গাপুরে দু:স্থ ও অসহায়দের পাশে থেকে সাধ্যমত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন তিনি। এছাড়া সোমেশ্বরীর নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর মাঝেও দিয়েছেন ক্ষুদ্র আর্থিক সহায়তা।ভবিষ্যতেও এসব অসহায় মানুষের পাশে থাকতে চান  তিনি।




প্রতিবেদক, বাংলাদেশ দর্পণ