নারায়ণগঞ্জ:টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয়ের হ্যাটট্রিক করলেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। প্রায় প্রায় দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে পরাজিত করেছেন তিনি। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হলেন আইভী।

রবিবার (১৬ জানুয়ারি) ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর এগিয়ে থাকার খবর আসতে থাকে। রাতের দিকে ডিসি অফিসের সামনে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা যখন ফল ঘোষণা করছিলেন, তখন রাস্তায় উচ্ছ্বসিত হাজারো মানুষ ‘আইভী’ আর ‘নৌকা নৌকা’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। একের পর এক কেন্দ্রের ফল ঘোষণা হচ্ছিল আর প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে আইভীর ব্যবধান বাড়ছিল। বাড়ছিল জনতার উচ্ছ্বাস। 

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে ১৯২ কেন্দ্রের মধ্যে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সবকটি কেন্দ্রের (১৯২) বেসরকারি ফলাফলে এগিয়ে রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি পেয়েছেন ১,৬১,২৭৩ ভোট।অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২,১৭১ ভোট।

বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী বিজয়ী হয়ে ফের নাসিকের মেয়র হতে চলেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। এটি হবে আইভীর হ্যাটট্রিক বিজয়। 

এর আগে ২০১১ সালে বাংলাদেশের কোনো সিটি করপোরেশনের প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন আইভী। ২০১৬ সালে দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তিনি জয়ী। এর আগে ২০০৩ সালে পৌর মেয়র হিসেবে আইভীকে বেছে নিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জবাসী।

নাসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ রোববার সকাল ৮টা থেকে ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯২টি কেন্দ্রে নাসিকের ভোটগ্রহণ শুরু হয়; একটানা চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। সকালে ভোটকেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটারের সংখ্যাই বেশি চোখে পড়ে। ভোটের মাঠে মেয়র পদে ছয়, সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৩৪ এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৪৫ জনসহ মোট ১৮৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

২০১১ সালের ৫ মে প্রতিষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এ নিয়ে তৃতীয়বার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে তৎকালীন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এক লাখ ৮০ হাজার ৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। 

ওই নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। ওই নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৭০ শতাংশ। 

২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসাবে সেলিনা হায়াৎ আইভী ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোটে আবার নির্বাচিত হন। সেবার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সাখাওয়াত হোসেন পান ৯৬ হাজার ৪৪ ভোট। ওই সময়ে ভোট পড়েছিল ৬২ শতাংশ। তবে এবার ব্যতিক্রমী একটি নির্বাচন দেখছেন নারায়ণগঞ্জবাসী। 

এ নির্বাচনে হেভিওয়েট দুই প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনি কোনো ইশতেহার ঘোষণা করেননি। তারা প্রচারের সময়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে মৌখিক নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।