যশোরের অভয়নগরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী অফিসসহ মন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও প্রার্থীর বাড়িতে ইট পাটকেল নিক্ষেপের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী অর্জুন সেনের তিনটি নির্বাচনী অফিসসহ একটি মন্দিরে আগুন দেয়া হয়েছে। বসতবাড়িতে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে ইউনিয়নব্যাপী উত্তেজনা বিরাজ করছে। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। 

শুক্রবার ভোররাতে বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অর্জুন সেনের তালতলা খেয়াঘাট, মধ্যপুর ও বিভাগদী গ্রামে তিনটি নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরবর্তীতে অুর্জন সেনের বসতবাড়িতে ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও বাড়ি সংলগ্ন জগধাত্রী মন্দিরে হামলা চালিয়ে রাধাকৃষ্ণের ছবি ও নৌকার পোস্টারে আগুন দেয়া হয়েছে।  
এ ব্যাপারে জগধাত্রী মন্দির কমিটির সভাপতি বিকাশ কুমার সেন বলেন, আমার বসতবাড়ি মন্দিরের পাশে। শুক্রবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৩ টার সময় আমার বাড়ির টিনের চালে ইট পাটকেল পড়তে থাকে। এ সময় প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখি মন্দিরের বারান্দায় আগুন জ্বলছে। এগিয়ে গিয়ে দেখি রাধাকৃষ্ণের ছবি পুড়ে গেছে, আগুনে পোড়া নৌকার পোস্টার ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যারা মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। 
প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শুক্রবার ভোররাতে মন্দিরের পাশে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ তৈয়েবুর রহমান (প্রতীক মোটরসাইকেল) ও অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এম আজিম উদ্দিনের (প্রতীক আনারস) ১০/১৫ জন কর্মীকে লাঠি হাতে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছি। 
নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী অর্জুন সেন বলেন, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ তৈয়েবুর রহমান (প্রতীক মোটরসাইকেল) ও অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এম আজিম উদ্দিন (প্রতীক আনারস) নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত ভেবে আমার তিনটি নির্বাচনী অফিসে আগুন ও বাড়িতে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। তারা সনাতন ধর্মের মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে মন্দিরে আগুন দিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। 
অভিযোগের বিষয়ে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ তৈয়েবুর রহমানের ০১৭১২-২৫২৫৫২ নাম্বারে বার বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 
আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এম আজিম উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, নির্বাচনী অফিস ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। যারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ে রাজনীতি করে তাদের ধ্বংস অনিবার্য। নির্বাচনে জয় নিশ্চিত ভেবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। 
এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান জানান, বিষয়টি জানতে পেরে সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। নৌকার প্রার্থী ও মন্দির কমিটি অভিযোগ দায়ের করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
প্রসঙ্গত, আগামী রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) চতুর্থ ধাপে অভয়নগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত নির্বাচনে ৮টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৪২ হাজার ৯৮। মহিলা ভোটার ৭০ হাজার ৯৩৪, পুরুষ ভোটার ৭১ হাজার ১৬৪। মোট কেন্দ্র ৮৬টি। ৮টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪০ জন, সংরক্ষিত আসনে ৯৫ জন ও সাধারণ ওয়ার্ডে সদস্য পদে ২৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।