যথাযথ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আজ (১২ জুলাই) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে রাস্তায় বের হয়নি রথ, কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ ছিল আয়োজন।

রবিবার (১২ জুলাই) স্বামীবাগ আশ্রমে রথযাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ (পিপিএম, সেবা), ওয়ারী বিভাগ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ কমিশনার হাফিজুর রহমান, গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজু মিয়া,  নারিন্দা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হারুন অর রশিদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ চারু চন্দ্র দাস। 

অনুষ্ঠান উদ্বোধন কালে শাহ্ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিকল্প নেই। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্যে সরকার ও প্রশাসন নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আজ সনাতন ধর্মের অন্যতম উৎসব রথযাত্রা। জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার এই সময়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে আমরা প্রার্থনা করব, আমরা যেন সাফল্যের সঙ্গে করোনা মহামারি মোকাবিলা করতে পারি। দেশে যেন শান্তি ও সুশঙ্খলা বজায় রাখতে পারি। আপনাদের সমস্ত আয়োজনে সবসময়ই আমাদের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।

May be an image of 2 people and people standing

এছাড়াও তিনি করোনা মহামারি থেকে বাঁচতে জগন্নাথ দেবের কাছে প্রার্থনা করার আহ্বান জানান। এরপর রথযাত্রা উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি। রথযাত্রা উদ্বোধনে তার সঙ্গে ছিলেন ইসকনের অধ্যক্ষ চারু চন্দ্র দাস। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনের পর তারা রথের দড়ি ধরে টান দিয়ে রথযাত্রা উদ্বোধন করেন।

প্রতিবছর স্বামীবাগ আশ্রম থেকে যাত্রা শুরু করে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা গিয়ে পৌছায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে। তবে এবার বৈশ্বিক মহামারি ও দেশে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রাস্তায় রথ বের হয়নি।

এবার রথের পরিবর্তে মাইক্রোবাসে করে জগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রার শ্রীবিগ্রহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। সেখানে আগে থেকেই ভক্তমণ্ডলী প্রস্তুতি নিয়েছিলেন প্রভু জগন্নাথকে অভ্যর্থনা জানাতে। 

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই বাংলাদেশেও আবহমান কাল থেকে রথযাত্রা উদযাপন হয়ে আসছে। দেশের সবচেয়ে বড় রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় ধামরাইতে। এছাড়াও অনেক বৈষ্ণব মন্দির এবং বিশেষ করে অন্যতম বৈষ্ণব সম্প্রদায় ইসকন পরিচালিত প্রতিটি মন্দিরেই আজ সীমিত পরিসরে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জানা যায়, প্রাচীনকালে উড়িষ্যার পুরীতে প্রথম জগন্নাথ দেবের বিগ্রহ স্থাপন করে পূজা করেছিলেন রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন। মূলত ভগবান শ্রীকৃষ্ণেরই একটি রূপ জগন্নাথ বিগ্রহ। রথযাত্রায় তার সঙ্গে রয়েছেন দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রা। আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ-ইসকনের উদ্যোগে এশিয়ার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে, বিশেষত ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বহু দেশেই এখন সাড়ম্বরে রথযাত্রা পালন করা হয়।

বিশেষ প্রতিবেদক, বাংলাদেশ দর্পণ