পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের নিহার রঞ্জন সরকার (১৪) নামের নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রকে কোরান শরীফ অবমাননার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া কিশোর নিহার রঞ্জন সরকার করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকায় বন্ধুদের কাছ থেকে ফ্রী ফায়ার গেইমের কভারপেজ ফটো এডিট করা শেখে। এক পর্যায়ে, গেইমের একটি চরিত্রের ছবি এডিট করে ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আপলোড করে গত ৯ জুন।

জানা যায়, ফ্রী ফায়ার একটি অনলাইন গেইম। সেই গেইমের একটি মানুষ ক্যারেক্টার থাকে। গেইমের সেই মানুষ ক্যারেক্টারের দুটো ডানা থাকে। হাতে থাকে একটা অস্ত্র ও পায়ের নিচে একটা অজানা অস্পষ্ট একটা বই আকৃতির পৃষ্ঠা থাকে।

 
আর সেই ডিএন মানুষ ক্যারেক্টারের জায়গায় নিহার রঞ্জন সরকার (১৪) তার নিজের ফটো দিয়ে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ৯ জুন আপলোড করে। এরপর স্থানীয় প্রভাবশালীরা কোরান শরীফ অবমাননার নাম দিয়ে ভয় দেখিয়ে নিহার রঞ্জনের দরিদ্র পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা চাইলে তা না দিতে পারলে গত ২৭ জুন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ নিহার রঞ্জনকে কোন প্রমান ছাড়া, পর্যালোচনা ছাড়াই গ্রেফতার করে।

এ ব্যাপারে, পটুয়াখালী জেলা হিন্দু ছাত্র পরিষদের আহ্ববায়ক অভিক কুন্ডু এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, "নিহারের এডিট করা ফটোটি ফ্রী ফায়ার গেইমের একটি ক্যারেক্টার। সেখানে ওই ক্যারেক্টার ম্যান এর ফটোর যায়গায় শুধু নিহারের ফটো বসানো হয়েছে। আর গেইমের ক্যারেক্টার নিচে যে কোরান শরীফ আছে তার প্রমান কি? যদি কোরান শরীফ থাকতো তাহলে বিশ্বে এমন গেইম চালু থাকতো না।"

দশমিনা উপজেলার মানবজমিন প্রতিনিধি সাফায়েত হোসেন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে লিখেন  , "গেইমের কভারপেজে নিহার রঞ্জনের এডিট করা সেই বই আকৃতির ছবিটি আমার দৃষ্টিতে কোন ভাবেই পবিত্র কোরান শরীফ মনে হচ্ছে না। ঘটনাটি সঠিকভাবে পর্যালোচনা করে সত্যতা নিশ্চিত করলে ছেলেটি নির্দোষ প্রমানিত হবে।