বাঙালি সনাতন সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় ৩ দিনের সরকারি ছুটির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট।


বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহা সচিব গোবিন্দ প্রমানিক, সভাপতি বিধান বিহারী গোস্বামী, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল ও সাধারণ সম্পাদক সজীব কুন্ডু তপু স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি ২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। প্রেরিত স্মারকলিপির বক্তব্য নিম্নরুপ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা। আপনার বলিষ্ঠ
নেতৃত্বে বাংলাদেশে যেভাবে করােনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন সেজন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জনগন কৃতজ্ঞ থাকবে।
আমরা আপনার সর্বক্ষেত্রে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় স্বাধীনতার পূর্ব হতেই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে ভােট দিয়ে
আসছে। এখন পর্যন্ত শতভাগ ভোট আওয়ামী লীগকেই দিয়ে থাকে। সেকারনেই এই সরকারের প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের আশা আকাঙ্খা অনেক।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন দূর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব, বাঙ্গালীর চিরন্তন ঐতিহ্য
বটে। প্রতিটি পরিবারের কোন না কোন সদস্য পড়াশুনা, চাকুরী বা ব্যবসার প্রয়ােজনে অন্যত্র বসবাস করে। সেজন্য
হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যগণ পরিবার পরিজনের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য সারাবছর এই দিনগুলির জন্য অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দূর্গা পুজায় ৫ দিনের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও সরকারীভাবে মাত্র একদিনের ছুটি
থাকে, সেটাও বিজয়া দশমীর দিন। ফলে দুর্গা পুজায় কারাে পক্ষেই গ্রামে গিয়ে পরিবার পরিজনের সাথে ধর্মীয়
কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযােগ থাকে না। বিজয়া দশমীতে পিতা মাতা, ও প্রতিবেশী গুরুজন ব্যক্তিদের প্রণাম করা ও আর্শিবাদ গ্রহণ একটি ধর্মীয় সামাজিক রীতি। এর মধ্যদিয়ে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সৃষ্টি হয়। কিন্তু ১ দিন ছুটি থাকায় কারাে পক্ষেই গ্রামে গিয়ে পিতা মাতা বা গুরুজনদের সান্নিধ্য লাভের সুযােগ থাকে না। ফলে পূজার দিনগুলি পিতা মাতা সন্তান, স্বামী, স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ মানসিক কষ্টের মধ্যেই দিন কাটাতে বাধ্য হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
গত ১৪ বছর ধরে হিন্দু সম্প্রদায় মানববন্ধন, স্মারকলিপি, গণস্বাক্ষর সহ বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে আপনার দৃষ্টি
আকর্ষন করার চেষ্টা করেছে। সংধািনের মূলনীতিতেও ধর্মনিরপেক্ষতার বিধান রয়েছে। এতদ্বসত্বেও দেশের হিন্দু
সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দুর্গা পূজায় ৩ দিনের ছুটির দাবীটি উপেক্ষিত। আমরা আশা করি আপনি আসন্ন দুর্গা পূজার
আগেই হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবীটি আপনি নির্বাহী আদেশে ঘােষণা ও বাস্তবায়ন করবেন। তা হলে হিন্দু
সম্প্রদায় চিরদিন আপনাকে স্মরণ করবে।